জব-রেডি গ্র্যাজুয়েটসঃ একটি কেস স্টাডি

জব-রেডি গ্র্যাজুয়েটসঃ একটি কেস স্টাডি

অস্ট্রেলিয়া সরকারের উদ্যোগে কোয়ালিটি ইন্ডিকেটরস ফর লার্নিং এ্যন্ড টিচিং (কিউআইএলটি) এর ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছর এদেশে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিষয়ে একটা সমীক্ষা পরিচালিত হয়। এই সমীক্ষার আওতায় থাকে তিনটি বিষয়ঃ
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গ্রহণ কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা (স্টুডেন্ট এক্সপেরিয়েন্স সার্ভে);
২. বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগের পরে ছয়মাসের মধ্যে চাকুরিতে নিয়োগপ্রাপ্তি, অর্জিত দক্ষতার প্রয়োগ এবং ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে কি ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে তার রোজনামচা (গ্র্যাজুয়েট আউটকামস সার্ভে);
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথাগত শিক্ষা গ্রহনের পর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীরা নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হয়েছে? সাধারণত নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের যারা হাতেকলমে কাজ শেখান সেইসব তত্ত্বাবধায়করাই কর্মীদের বিশেষ দক্ষতা ও এ্যাট্রিবিউটস সম্পর্কে সমীক্ষায় তথ্য সরবরাহ করেন (এমপ্লয়ার স্যাটিসফেশন সার্ভে)।

এই কোয়ালিটি ইন্ডিকেটরস ফর লার্নিং এ্যন্ড টিচিং (কিউআইএলটি) এর সমীক্ষা এ দেশের হায়ার স্ট্যাডিস সেক্টরে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বরাবরের মতই চার্লস স্টাট ইউনিভার্সিটি (Charles Sturt University) এদেশের চল্লিশটা ইউনিভার্সিটির মধ্যে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ফুল-টাইম গ্র্যাজুয়েট এমপ্লয়মেন্টের সাফল্য অর্জনে শীর্ষ স্থান লাভ করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হওয়া গ্র্যাজুয়েটদের শতকরা ছিয়াশি ভাগ চার মাসের মধ্যেই ফুল টাইম কাজে যোগ দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার মানুষের বাৎসরিক গড় আয় তেষট্টি হাজার ডলার (চল্লিশ লাখ টাকা) আর এই গ্র্যাজুয়েটরা শুরুতেই সাতষট্টি হাজার ডলার (সাড়ে তেতাল্লিশ লাখ টাকা) গড় বেতনে কাজে যোগ দিয়েছেন।

পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পর্যায়েও সমীক্ষার ফলাফল খুব ভালো। দেশের শীর্ষ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই এর অবস্থান। সমীক্ষায় দেখা গেছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করা ছাত্রছাত্রীদের বাৎসরিক গড় প্রারম্ভিক বেতন পঁচানব্বুই হাজার ডলার (বাষট্টি লাখ টাকা)।

আমি ১৯৯৭ সালে এখানে কাজ করতে এসেই এদের কোর্সগুলো কিভাবে ইন্ডাস্ট্রির প্রয়োজনের সঙ্গে সমান্তরাল করে স্ট্রাকচার করা সেটা বুঝতে পারি। ২০০২ সালে সাইকোলজির কোর্ডিনেটর অব আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্সেস হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার সময় প্রথম মিটিংয়েই ফ্যাকাল্টির ডীন আমাকে বলেছিলেন আমাদের মূল সমস্যা দক্ষ জনশক্তির। কোন ভাবেই বাজারে চাহিদা নাই এমন প্রোডাক্ট বানানোর বিলাসিতা করা যাবে না, তাই কোর্স রিভিউ প্রক্রিয়াটি হতে হবে চলমান।

প্রতি বছরই এদের কোর্সগুলো আমূল যাচাই-বাছাই, নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায়। প্রোসপোক্টিভ নিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নিবিড় নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে তাদের চাহিদা যাচাই করা হয়। প্রায় সবগুলো কোর্সেই শেষ বছরে ছাত্রছাত্রীদের এক থেকে দু’মাসের জন্য ডিসিপ্লিন সংশ্লিষ্ট ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য পাঠানো হয়। তবে এটা যে শুধুমাত্র আমাদের ইউনিভার্সিটিতেই হয় সেটা নয়। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, সকল পর্যায়ের শিক্ষায়ই বছরে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ ছাত্রছাত্রী এদেশে ইন্ডাস্ট্রি পরিচালিত প্রজেক্ট, ফিল্ডওয়ার্ক, প্র্যাকটিক্যাল সিমুলেশনস ও ওয়ার্ক প্লেসমেন্টে অংশগ্রহণ করে।

অস্ট্রেলিয়ায় রিসার্চ ফান্ডিংয়ের একটা বিরাট অংশের উৎস এই ইন্ডাস্ট্রিগুলো। ইন্ডাস্ট্রিগুলোই তাদের নিজের গবেষণায় দেখিয়েছে রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্টে তাদের বিনিয়োগ কিভাবে নতুন প্রযুক্তি ইনোভেশন ও প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাদের গবেষণা প্রমাণ করে যে ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে হায়ার স্ট্যাডিজ সেক্টরে রিসার্চ ও রিসোর্স ডেভেলপমেন্টে এক ডলার বিনিয়োগ হলে তা আমাদের জিডিপিতে পাঁচ ডলার হয়ে ফেরত আসে।

অন্যান্য ওইসিডি দেশের মতই অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষা খাতে বরাদ্দ জিডিপির ৫.৩%। এর মধ্যে উচ্চ শিক্ষায় বরাদ্দ ১.৮%. প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রির খরচের শতকরা ষাট ভাগই আসে সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকা থেকে। তাই জনগনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাজের স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের নিরপেক্ষ সমীক্ষা জনগনের কাছে জাতীয় উন্নয়নে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকার একটা স্ন্যাপশট উপস্থাপন করে। আমি জানি না বাংলাদেশে ইউজিসির মাধ্যমে এ ধরনের কোন সমীক্ষা পরিচালিত হয় কি না।

এখানে জব-রেডি গ্র্যাজুয়েট তৈরির কলাকুশলীদের সম্পর্কেও একটা সাধারণ ধারণা দিতে চাই। পশ্চিমা দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি খুবই স্ট্রেসফুল। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে স্থায়ীত্ব একটি খুবই আপেক্ষিক শব্দ। চাকুরি টিকিয়ে রাখার জন্য প্রতি বছর তাদের কর্মদক্ষতা মানে পারফর্মেন্সের মূল্যায়ন হয়। সেখানে প্রত্যেক শিক্ষককেই তার টিচিং ও রিসার্চ এ্যকটিভ স্ট্যেটাসের প্রমাণ দিতে হয়। এটা যে কি প্রাণান্তকর ব্যাপার সেটা নিয়ে ভবিষ্যতে লেখার ইচ্ছা আছে।

অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গড় গ্রস বাৎসরিক আয় প্রায় একশ’ ষাট হাজার ডলার (এক কোটি টাকা)। কিন্তু শতকরা প্রায় পঁয়ত্রিশ ভাগ ট্যাক্স দেবার পরে হাতে আসা টাকার অংকটা বেশ অপ্রতুল। কেউ যদি বেতনের সব টাকা ব্যাংকে জমা করে রাখে, ছেলেমেয়ে নিয়ে গাছতলায় থাকে আর ঘাসপাতা ও ফ্রি কলের জল খেয়ে জীবনযাপন করে, তবে বর্তমান বাজারে সিডনিতে দশ কাঠা জাইগার ওপরে একটু ভালো মানের চার বেড রুমের একটা বাড়ি কিনতে তার পনেরো বছর লাগবে। মেলবোর্নে লাগবে বারো বছর। আর ক্যানবেরা, ব্রিসবেন, ডারউইন, পার্থ আর হোবাটে লাগবে আট-নয় বছর।

এই বেতন সম্পর্কে আরেকটি কথা অস্ট্রেলিয়ায় প্রাথমিক আর মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের বেতন কিন্তু প্রায় সমান। এদের বাৎসরিক গড় বেতন আটান্ন থেকে বাষট্টি লক্ষ টাকার মত। ওইসিডি দেশগুলোর কোথাও স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনের কোন আকাশ- পাতাল পার্থক্য দেখা যায় না। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গড় বেতন কত সেটা ইউজিসির কোন প্রকাশনা থেকে জানা যায় না। তবে যুক্তরাজ্যের একটি শিক্ষা-গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাইত্রিশটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বলেছে যে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের বছরে গড় বেতন প্রায় পনেরো লক্ষ টাকা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের অবস্থান বাংলাদেশের জাতীয় বেতন স্কেলের প্রথম তিনটি ধাপে। বাংলাদেশে সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সহকারি শিক্ষকদের অবস্থান জাতীয় বেতন স্কেলের তেরতম ধাপে, এবং বছরে গড় বেতন প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারি শিক্ষকদের অবস্থান জাতীয় বেতন স্কেলের দশতম ধাপে, এবং বছরে গড় বেতন প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা।

এই লেখাটা কোন দিক থেকেই বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করার জন্য নয়, কারণ অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, ভৌগোলিক, কৃষ্টিগত, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক আর বৈশ্বিক অবস্থানগত পার্থক্য অনেক। তারপরেও পাঠকের সুবিধার জন্য কয়েকটি তথ্য যোগ করা যায়।

বিশ্ব ব্যাংকের হিসাবে আগের বছরগুলোতে ২% হলেও ২০১৯ সালে সব ধরনের শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিলো জিডিপির ১.৩৫%। এম মধ্যে আর উচ্চ শিক্ষা খাতের বরাদ্দ ছিলো ০.৪৬%. আরেকটি খুব প্রাসঙ্গিক তথ্য হচ্ছে রিসার্চ ও ডেভলাপমেন্টে ইউনিভার্সিটি – ইন্ডাস্ট্রি কলাবরেশন র‍্যাংকিং এ ১৪০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ১৩১, আর ভারতের ৪৬।

কোন নির্ভরযোগ্য জরীপ না পাওয়া গেলেও বিশ্বব্যাংকের প্রকাশনা ‘বাংলাদেশ ডেভলাপমেন্ট অপডেট ২০১৯’ থেকে জানা যায় যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে পাশ করে বের হওয়া গ্র্যাজুয়েটদের শতকরা প্রায় ত্রিশ ভাগই দুই বছর পর্যন্ত তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চাকরি পান না। চাকুরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে জেন্ডার বৈষম্যও বেশ লক্ষনীয়। দু’বছরের বেশি সময় ধরে বেকার থাকেন শতকরা তেতাল্লিশ ভাগ নারী গ্র্যাজুয়েট। এই বৈষম্য কমিয়ে আনার কার্যকর কৌশল না বের করতে পারলে ব্যাপারটা একটা মধ্য আয়ের দেশের জন্য বেশ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

সব চাইতে দুশ্চিন্তার ব্যাপার হচ্ছে আমাদের কারিগরি শিক্ষার বাজারমূল্য নিয়ে। শতকরা পঁচাত্তর ভাগ পলিটেকনিক গ্র্যাজুয়েটই বেকার থাকেন পাশ করার এক বছর পরেও। এদের অনেকেই কাজ না পেয়ে হতাশ জীবন যাপন করেন এবং উচ্চতর শিক্ষায় নিজেকে নিয়োজিত করার কথা ভাবেন। অথচ শ্রমবাজার নিয়ে যেসব জরীপ হয়েছে তাতে দেখা যায় নিয়োগদাতারা উচ্চ-দক্ষতা সম্পন্ন প্রফেশনালস, টেকনিশিয়ান বা ম্যানেজার পদের জন্য আমাদের দেশের গ্র্যাজুয়েটদের মধ্য থেকে চৌকস যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী পান না। স্কুলে তো নয়ই, স্কুল-পরবর্তী কোন পর্যায়েও শিক্ষার কারিকুলামে লাগসই কমিউনিকেশন স্কীল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট চিন্তা ক্ষমতা, প্রোবলেম সলভিং স্কীল, নেতৃত্ব দেয়ার ও চাপ সহ্য করার ক্ষমতা, এবং কার্যকর টীমওয়ার্ক স্কীল গড়ে তোলা শেখানোর কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। এসব কারণেই হয়তো বাংলাদেশের বড় বড় কর্পোরেটে ব্যবস্থাপনার পদগুলোতে বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ এত বেশি।

২০১৭ সালে বাংলাদেশে এ্যাক্টের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে এ্যকক্রেডিটেশন কাউন্সিল বাংলাদেশ (এসিবি) গঠন করা হয়। দেশের শিক্ষা কার্যক্রমের মান নিয়ন্ত্রণের বিধিবিধান ও জাতীয় কোয়ালিফিকেনস ফ্রেমওয়ার্ক নির্ধারণে এই প্রতিষ্ঠানটির অগ্রণী ভূমিকা রাখার কথা। আন্তর্জাতিক শিক্ষামানের সাথে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার তুলনাকরে উন্নয়নের বাস্তব পদক্ষেপ সুপারিশ করাও এই প্রতিষ্ঠানটির কাজ। অনেক চেষ্টা করেও প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমের সফলতার কোন স্বচ্ছ প্রকাশনা খুঁজে পেলাম না।
একই ভাবে উচ্চ শিক্ষায় একটি সর্বগ্রহণযোগ্য মান নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের পাবলিক আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলোই তাদের নিজস্ব ইনস্টিটিউশন্যাল কোয়ালিটি এ্যসুউরেন্স সেল (আইকিউএসি) গঠন করে। উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতই প্রতি বছরই বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইকিউএসি এর রিপোর্ট প্রকাশ করার কথা, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটে এ ধরনের কোন রিপোর্টই খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান মূল্যায়ণ করা যায় এমন কার্যক্রম প্রকাশের স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতার অভাব আমাকে খুব উদ্বিগ্ন করে।

এই উন্নত তথ্য প্রযুক্তির যুগে সারা পৃথিবীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদেরও হিউম্যান ক্যাপিটাল উন্নয়নে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মাঝারি আর বড় ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সঙ্গে কলাবরেশনের সুযোগ খুঁজতে হবে। আশার কথা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই বিষয়ে বেশ গুরুত্বদিয়ে কাজ করছেন।

উন্নতদেশগুলোতে একটি কোর্স ১) কি ধরনের গ্র্যাজুয়েট এ্যট্রিবিউটস ডেভলাপ করবে; ২) কি কৌশল, পদ্ধতি ব্যবহার করে করবে; ৩) প্রশিক্ষকদের মান কেমন হবে আর তাদের ভূমিকা কি হবে; ৪) কি ধরনের রিসোর্স প্রয়োজন হবে; ৫) সত্যিই গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে সেই দক্ষতাগুলো গড়ে উঠেছে কিনা সেটা কি ভাবে জানা যাবে আর ৬) যে সব ত্রুটি আর সীমাবদ্ধতা সনাক্ত হবে সেগুলোর সংশোধনের পন্থা কেমন হবে তার একটা স্পষ্ট রূপরেখা দেয়া থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে এই গ্র্যাজুয়েট এ্যট্টিবিউটস আর কম্পিটেন্সি ফ্রেমওয়ার্ক নির্ধারণ আর তার হাতে কলমে কার্যকর প্রয়োগ না হবে, ততক্ষণ গ্র্যজুয়েটদের একটা বড় অংশের বেকারত্বের কোন সমাধান হবে বলে মনে হয় না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, কিছু বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নিতে পারলে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও জব-রেডি গ্র্যাজুয়েট তৈরি করার ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে।

লেখকঃ মীর রবিউল ইসলাম, পিএইচডি (বৃস্টল), সিডনী, অস্ট্রেলিয়া , আগষ্ট, ২০২১, [email protected],
ORCID ID: https://orcid.org/0000-0003-2795-005X